করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। ইউরোপে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এখন স্পেনের। কারণ ইতালির পরই স্পেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৯১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭১৬ জনে।
সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৯৫৬ জন। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৭৮০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৮৪৬ জন।
এছাড়া স্পেনে বর্তমানে ৬৩ হাজার ৪৪০ জন আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৫৮ হাজার ২২৯ জনের অবস্থা সাধারণ। বাকি ৫ হাজার ২৩১ জনের অবস্থা গুরুতর এবং যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছেন।
স্পেনে কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এ মহামারি ঠেকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সরকার। কিন্তু এখন আবার বাজারও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য ও এর সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোটাই এখন কালোবাজারিদের দখলে। সব কিছুর দাম আকাশছোঁয়া। বেশি টাকা দিয়েও মিলছে না সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক, গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
অবৈধ মজুদ গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহেই মাদ্রিদের একটি ফ্যাক্টরি থেকে দেড় লাখ মাস্ক উদ্ধার করে দেশটির পুলিশ বাহিনী। পরে সেগুলো সাধারণ মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়।
দেশজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বেশি বেশি লাভ করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। তাদের ডাকাত ও দস্যু বলে অভিহিত করছেন অনেকেই। বলছেন, দিন-দুপুরে ডাকাতি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে স্পেনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সংক্রমণ ঠেকাতে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লকডাউন পুরো দেশ। সব রেস্তোরাঁ, বার, হোটেল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
শুধু খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ কেনার জন্য সুযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কর্মস্থল, হাসপাতাল এবং ব্যাংক যাতায়াত করার অনুমতিও রয়েছে। কিন্তু বাইরে গিয়েও খাবার ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। পেলেও দাম আকাশচুম্বী। খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে।
স্পেনবাসীর জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতাও বটে। যেমনটি বলছেন রাজধানী মাদ্রিদের কেন্দ্রীয় এলাকার ফার্মেসী মালিক আর্নেস্টো রুইজ লোপেজ। তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহে তিনি যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, তা জীবনেও দেখেননি।
উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৬৮৬। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৩ হাজার ৭১৬ জন।
এই ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৮৭ জন সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৫০ জন।